ই-কমার্স এখন ব্যাপক আলোচিত একটি বিষয়। পাশাপাশি আলোচিত মোবাইল ফোনের মাধ্যমে লেনদেন, যা এম-কমার্স নামে পরিচিত। সেটাও এখন সম্ভাবনাময় ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে অনেক দেশে। তবে আমাদের দেশে এখনো এ দুটি বিষয় পুরোপুরি চালু হয়নি। বর্তমানে দেশে মোবাইল ফোনের অ্যাকাউন্টে জমা টাকা অন্য মোবাইল অ্যাকাউন্টে পাঠানো যায়। এম-কমার্সের এই প্রয়োগি ব্যাপক জনপ্রিয় একটি বিষয়। দেশের চারটি জিএসএম প্রযুক্তিনির্ভর মোবাইল ফোন সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান ফেক্সিলোড, আই-টপআপ, শেয়ার-ই-ফিল এবং ইজিলোড নামে এ সেবা প্রদান করছে। প্রচলিত নিয়মে এসএমএসের মাধ্যমে রেজিস্ট্রেশন করে প্রাপ্ত গোপন নম্বর (পিন) ব্যবহার করে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের মধ্য যে কোন পরিমান টাকা পাঠানো যায় একই সেবাদাতার অন্য কোনো প্রাহক নম্বরে।
এ সেবার বড় অসুবিধা হলো পাঠানোর খরচ। সাধারণত, প্রাপকের প্রাপ্ত টাকা থেকে ভ্যাটসহ ২ টাকা ৩০ পয়সা কেটে রাখা হয়। এ ক্ষেত্রে কেউ যদি ৫০ টাকা পাঠিয়ে থাকেন তবে প্রাপকের হিসাবে জমা হবে ৪৭ দশমিক ৭০ টাকা। দুটি মোবাইল ফোন সেবাদাতা আবার প্রেরকের কাছ থেকেও একটি এসএমএস খরচও রেখে দেয়। অন্যদিকে মোবাইল ফোনের হিসাবে জমা থাকা টাকাকে ভাঙানোর কোনো ব্যবস্থা কোনো সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানই রাখছে না। এই ব্যবস্থায় টাকা লেনদেন হচ্ছে ঠিকই কিন্তু গ্রাহক-প্রাপক কেউই নগদ টাকা লেনদেন করছেন না। মূল কাজটি হচ্ছে সেবাদাতার কম্পিউটারে।
এই প্রক্রিয়াটির কিঞ্চিত পরিবর্তন এবং নতুন কিছু বৈশিষ্ট্য সংযুক্ত করে টাকা লেনদেন প্রক্রিয়াকে অনেক সহস এবং ব্যাপক ভাবে করা যায়। এমনকি এটিএম-এর মতো একটি সেবা বাংলাদেশের সব মোবাইল ফোন ব্যবহারকারীর জন্যও দেওয়া সম্ভব।আমার প্রস্তাব হলো-
১। দশ টাকা থেকে শুরু করে প্রয়োজন অনুযায়ী যেকোন পরিমান টাকা পাঠানোর সুযোগ থাকবে।
২। পাঠানোর জন্য এসএমএস খরচ সর্বোচ্চ ৫০ পয়সা করা।
৩। প্রাপকের হিসাবে জমা হওয়া টাকা থেকে কোনো ফি না কাটা এবং
৪। মোবাইল ফোনের হিসাবে জমা হওয়া টাকা ব্যাংক থেকে ভাঙানোর সুযোগ থাকা।
তবে মনে হয় ডিডি, টিটি করার জন্য ব্যাংকে না গিয়ে সবাই মোবাইল থেকে টাকা লেনদেন করতে আগ্রহী হবেন। ব্যাংক থেকে জমা অর্থ ভাঙানোর ক্ষেত্র আমার প্রস্তাব হলো- ব্যাংকের শাখাগুলোয় একটি করে মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা হবে। যে নম্বরে গ্রাহক টাকা পাঠালে ওই টাকার অনুকূলে ব্যাংক তাকে নগদ অর্থ দেবে। ইচ্ছা করলে এটিএম মেশিনেও এধরনের সুবিধা দেওয়া যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে প্রতিটি এটিএম বুথের জন্য একটি মোবাইল নম্বর ব্যবহার করা হবে। কোনো ব্যক্তি বুথে উপস্থিত হয়ে ওই নম্বরে পাঠানো অর্থের বিপরীতে নগদ টাকা তুলতে পারবেন। এ ক্ষেত্রে গ্রহক এটিএম বুথ থেকে টাকা নেওয়ার সময় তার মোবাইল নম্বরটি এবং রেজিস্ট্রেশনের সময় প্রাপ্ত গোপন নম্বরটি (পিন) ব্যবহার করবেন।
এ ধরনের পদ্ধতিতে টাকা লেনদেন শুরু হলে সাধারণ কেনাকাটাতের নগদ অর্থের পরিবর্তে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে দাম পরিশোধ করা যাবে। ইচ্ছে করলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ব্যাংকের বদলে মোবাইলে টাকা লেনদেন করতে পারবে (যেহেতু পরে ক্যাশ করা যাচ্ছে)।
প্রযুক্তিগতভাবে পিছিয়ে থাকা এ দেশের মানুয় গ্রামে বসেও মুহূর্তের মধ্যে টাকা আদান-প্রদান করতে পরবেন। সবাই অনলাইন লেনদেনের সুবিধা গ্রহন করতে পারবে বলে আমার বিশ্বাস। আপনি কি বলেন?